প্রবন্ধ রচনাঃ পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য

সূচনা

এ পৃথিবীতে সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপনজন হলেন মাতা-পিতা। তারা আমাদের জন্ম দেন এবং পরম মমতায় লালন পালন করেন। তাই প্রত্যেকটা সন্তানের উচিত মাতা পিতার প্রতি যথাযথ কর্তব্য পালন করা।

পিতামাতার অবদান

পিতামাতার জন্যেই সন্তান এই সুন্দর পৃথিবীর রূপ-রস, আরাম আয়েশ সুখ স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছে। শিশুসন্তানের প্রতি পিতামাতার অবদান অপরিসীম ও বর্ণনাতীত। মা অতিকষ্টে দশ মাস দশ দিন সন্তানকে তাঁর গর্ভে ধারণ করেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই মা অসুস্থ ও দুর্বল শরীর নিয়ে সন্তানের সেবাযত্ন করেন। মাতৃস্তন্য পান করে শিশু বেঁচে থাকে। সন্তানের জন্য মায়ের চিন্তার যেন শেষ নেই। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন তাঁর পল্লী জননী কবিতায় লিখেছেন—

রাত থমথম স্তব্ধ নিঝুম ঘন ঘোর আন্ধার
নিঃশ্বাস ফেলি তাও শোনা যায়, নাই কোথা সাড়া কার। রুগ্ন ছেলের শিয়রে বসিয়া একেলা জাগিছে মাতা
করুণ চাহনি ঘুম ঘুম যেন ঢুলিছে চোখের পাতা শিয়া কাছে নিবু নিবু দীপ ঘুরিয়া ঘুরিয়া জ্বলে
তারি সাথে সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরান দোলে।

নিজেদের আরাম আয়েশ ভুলে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের ভিতর দিয়ে পিতামাতা সন্তানদের বড় করে তোলেন এবং লেখাপড়া শেখান। সন্তানের আহার যোগাড় করেন। সন্তান যাতে সুশিক্ষা লাভ করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্যে পিতামাতার চেষ্টার অন্ত থাকে না। প্রত্যেক পিতামাতাই তাঁদের সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে চান। পিতা নিজে কষ্ট স্বীকার করেও সন্তানের জন্য ধন সঞ্চয় করে যেতে চেষ্টা করেন। তাঁদের এই নিঃস্বার্থ ত্যাগের তুলনা নেই। সন্তানের কোনো অসুখবিসুখ হলে পিতামাতার তখন চিন্তার শেষ থাকে না। আহার নিদ্রার কথা ভুলে গিয়ে তাঁরা তখন সন্তানের আরোগ্য লাভের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাত তুলে দোয়া চান সন্তানের জন্যে। এমনকি নিজের জীবনের বিনিময়ে তাঁরা সন্তানের জীবন ভিক্ষা চান। মাতাপিতার এ অবদান অতুলনীয়।

পিতামাতার প্রতি কর্তব্য

মানুষের মতো মানুষ হয়ে পিতামাতার মুখ উজ্জ্বল করা সন্তানের অন্যতম কর্তব্য। সন্তান যদি সুশিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সমর্থ হয় ও সুনাম অর্জন করতে পারে তবে পিতামাতা সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট হন এবং গৌরববোধ করেন। পিতামাতার সন্তান হিসেবে প্রত্যেক ছেলেমেয়ের মনে রাখা উচিত যেহেতু বাবা মা সবসময় সুখে দুঃখে বিপদে আপদে সব অবস্থায় তাদের কল্যাণ কামনা করেন সেহেতু তাদের উচিত পিতামাতার উপদেশ নির্দেশ মেনে চলা।আমরা কিন্তু অনেক সময় পিতামাতার আদেশ নির্দেশ পালন করি না। বরং কখনো কখনো তাঁদের উপদেশের বিপরীত কাজ করে থাকি। এতে পিতামাতা যে কতটা মানসিক কষ্ট ভোগ করেন তা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি? সন্তানের অপরিণত বুদ্ধিই পিতামাতার কষ্ট ভোগের কারণ হয়। সন্তানের বয়স কম থাকলে পিতামাতার নির্দেশ ও উপদেশ পালনের মাধ্যমেই তারা নির্ভুল পথে চলতে পারে। সন্তান ছোট হোক বড় হোক বুদ্ধিমান কিংবা বুদ্ধিহীন হোক পিতামাতা সব সময় তার মঙ্গল কামনা করেন। সন্তান যদি পিতামাতার উপদেশ ও নির্দেশ মেনে চলে তবে সেটা যেমন সন্তানের জন্য মঙ্গলজনক তেমনই সমাজের জন্যেও কল্যাণকর।সন্তান যদি চরিত্রবান হয় জ্ঞানীগুণী বলে সমাজের প্রশংসা পায় তাহলেই পিতামাতার ঋণ কিছুটা পরিশোধ হতে পারে। তাই পিতামাতার মুখ। উজ্জ্বল করা ও তাঁদের গৌরব বৃদ্ধি করার জন্য প্রত্যেক সন্তানেরই তৎপর হওয়া উচিত। কিন্তু সন্তান যদি পিতামাতার অবাধ্য হয় এবং উচ্ছৃঙ্খলতার স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয় তবে তার জীবনে সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

পিতামাতার আদেশ নির্দেশ অমান্য করে চলার অর্থ হচ্ছে জীবনে ব্যর্থতাকে বরণ করা। ফলে তাদের চারিত্রিক অধ্যপতন ঘটবে আর সমাজের কাছে নিন্দার পাত্র হবে। পিতামাতা সন্তানের মঙ্গলের কথা ভেবে তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে বলেন। সন্তান যদি লেখাপড়ায় ফাঁকি দেয় এবং মানুষ না হয়ে অমানুষ হয়, তবে তারা বড় হয়ে অর্থাভাবে কষ্ট ভোগ করে। তখনই তারা পিতামাতার উপদেশের তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারে। কিন্তু তখন শুধু অনুতাপে দগ্ধ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।পিতামাতার সেবা শুশ্রুষা করা সন্তানের প্রধান কর্তব্য। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এতটুকু দেরি করা যাবে না, কেননা তাতে তাঁরা মনে কষ্ট পেতে পারেন। তাঁদের সেবাযত্নের বিন্দুমাত্র ত্রুটি যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে। পিতামাতার বৃদ্ধ বয়সে উপযুক্ত সন্তান স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে অন্যত্র চলে গেলে সে মহাপাপী হবে। সন্তানের সবসময় মনে রাখতে হবে শিশুকালে পিতামাতা তাকে মানুষ করে তোলার জন্য যত্ন নিয়েছেন লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং বড় হলে সুখে শান্তিতে বসবাসের জন্য যথারীতি চেষ্টা চালিয়েছেন। তাই আজীবন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেই সন্তানের কর্তব্য পালন করা হবে না বৃদ্ধ বয়সে পিতামাতা যাতে সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারেন সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিতে হবে এবং তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি কোনো সন্তান পিতামাতার প্রতি অযত্ন ও অবহেলা দেখায় তবে তার পাপের শেষ থাকবে না।

পিতামাতার প্রতি সম্মান

প্রত্যেক ধর্মেই পিতামাতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে এবং তাঁদের সন্তুষ্টি বিধান করতে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন শরিফে ভক্তি ও শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে আল্লাহর পরেই পিতামাতার স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন যে মাতাপিতাকে সন্তুষ্ট করে সে আমাকে সন্তুষ্ট করে। মহানবি হযরত মুহম্মদ (স) বলেছেন মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। হিন্দুশাস্ত্রে আছে পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম। জননী আর জন্মভূমিকে স্বর্গের চেয়েও পবিত্র ও পূজনীয় বলে বিবেচনা করে সংস্কৃতে বলা হয়েছে জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী। হজরত আবদুল কাদের জিলানী (র) হজরত বায়েজীদ বোস্তামী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখ পিতামাতার বাধ্য ও অনুগত ছিলেন। এজন্যে তাঁরা আজ স্মরণীয় হয়ে আছেন। সুতরাং তাঁদের মনে কষ্ট হয় এমন কাজ কখনো করা উচিত নয়। নানা ধর্মে ও নানা মতে ব্যস্ত পিতামাতার এই সম্মান রক্ষার দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রত্যেক মানব সন্তানকে সচেতন হওয়া দরকার।

কর্তব্যের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব : মাতাপিতার কষ্ট, ধৈর্য, সাধনা ও শ্রমের ফলশ্রুতি হিসেবে সন্তানের সুন্দর জীবন গড়ে ওঠে। মা-বাবা যদি সন্তানের প্রতি অবহেলা দেখান তবে সে সন্তান কখনই যথার্থ মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে না। যাঁরা এ বিশ্বে নিজেদের জীবনের কল্যাণকর বিকাশ দেখিয়েছেন এবং বিশ্বের বুকে স্বীয় গৌরব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন তাঁরা শৈশবে সুযোগ্য মাতাপিতার স্নেহ ও শিক্ষায় লালিত-পালিত হয়েছেন। মাতাপিতার মহান ও সীমাহীন অবদানের প্রেক্ষিতে তাঁদের প্রতি কর্তব্য পালন করে বা তাঁদের সেবা করে তাঁদের এই ঋণ পরিশোধ করা যায় না। মা-বাবার প্রতি কর্তব্য পালনের অর্থ তাঁদের সাধনার প্রতিদান দেওয়া নয়। তাঁদের ঋণ পরিশোধ্য নয় একথা বিবেচনা করেই তাঁদের সর্বাধিক সুখ-শান্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাঁদের পূর্ণ সন্তুষ্টির দিকে সদাসর্বদা মনোযোগী হতে হবে।

কর্তব্যের ধরন : সন্তানের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য মাতাপিতার অনুগত ও বাধ্য হওয়া। মাতাপিতার অবাধ্য হলে তারা যেরূপ ব্যাথিত হন, এমন আর কিছুতেই হন না। রাম পিতৃসত্ব পালনের জন্য চৌদ্দ বছর বনবাস করেছিলেন, ভীমসেন মাতার আজ্ঞায় রাক্ষসমুখে যেতেও দ্বিধাবোধ করেন নি। শাস্ত্রে আছে বিদ্বান এবং ভক্তিমান নয় এমন সন্তানের জন্মের প্রয়োজন নেই। সর্বদা পিতা-মাতার সাথে ভদ্রতা ও নম্রতার সাথে মার্জিত ভাষায় কথা-বার্তা বলা প্রত্যেকটি সন্তানের জন্য একান্ত কর্তব্য। তাছাড়া পিতা-মাতার বৃদ্ধাবস্থায় যখন তারা চলতে ফিরতে অক্ষম হয়ে পড়েন তখন তাঁদেরকে চলতে ফিরতে সাহায্য করা, রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে সেবা-যত্ন করা। সন্তান যখন বড় হয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করে তখন মাতাপিতার ভরণপোষণের ভার পড়ে সন্তানের ওপর। মা-বাবার তখন বয়স বেড়ে প্রৌঢ়ত্বে বা বার্ধক্যে পৌঁছান। তাঁদের কর্মজীবন থেকে অবসর নিহে হয়। অনেকেই তখন সন্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় সব রকম সুখের ব্যবস্থা করা সন্তানের কাজ। নিজের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলেও মাতাপিতার সুখের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। মোটকথা, শৈশবে আমাদের অসহায় মুহূর্তে মাতাপিতা যেমনি আমাদের একান্ত অবলম্বন ছিলেন ঠিক তেমনিভাবে বৃদ্ধাবস্থায় তাদেরকে ছায়ার মত অনুসরণ করা প্রত্যেকটি সন্তানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন,
“পিতা-মাতার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করবে।”

তিনি আরো বলেন তোমরা পিতা-মাতার জন্য সর্বদা দোয়া প্রার্থনা কর-
‘হে আল্লাহ, আমার পিতা-মাতা শৈশবে যেমন স্নেহ মমতা দিয়ে আমাকে লালন পালন করেছিলেন, আপনি তাঁদের প্রতি তেমনি সদয় হোন।’

যে সন্তান পরিণত বয়স পর্যন্ত মাতাপিতার সেবা করার সুযোগ পান তিনি ধন্য। স্বীয় কর্ম ও চরিত্র দ্বারা মাতাপিতার তুষ্টিসাধন করা সন্তানের একান্ত কর্তব্য। আজকাল অনেক সন্তানকে মাতাপিতার প্রতি বিরাগী হতে দেখা যায়; এমন কি মাতাপিতাকে ঘৃণার চক্ষে দেখে এমন কুপুত্রেরও অভাব হয় না। যে মাতাপিতা জন্ম দিয়েছেন, শিক্ষিত হয়ে সে মাতাপিতাকে অবহেলা করা যে কত বড় পাপ তা কল্পনাও করা যায় না। সে সন্তান নরকগামী হয়। যে সন্তান প্রাণপণে মাতাপিতার তুষ্টিসাধন করতে পারে তার জীবন ধন্য- তার জন্ম সার্থক।


মাতৃঋণ

সন্তানের জন্য মা যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেন তা কল্পনাতীত। ভূমিষ্ঠ হবার পূর্ব থেকে শুরু করে যতদিন সন্তান সাবলম্বী না হয় ততদিন মা তাকে সর্বক্ষণ সযত্নে আগলে রাখেন। সন্তানের সামান্যতম সুখের জন্য একমাত্র মাতাই তাঁর জীবন উৎসর্গ করে দিতে সদা প্রস্তুত থাকেন। তাই মাতৃঋণ অসমতুল্য।

পিতৃঋণ

পিতা সন্তানকে নিজ জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। কীভাবে সন্তান সুস্থ থাকবে সবল থাকবে সুশিক্ষা পাবে দেশ ও দশের কল্যাণে কাজ করবে তার জন্যে পিতার চিন্তার অবধি থাকে না।

সন্তানের কর্তব্য

মাতাপিতার প্রতি আমাদের কর্তব্যের সীমা পরিসীমা নেই। তাঁদের স্নেহের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। আমাদের কথায় আচরণে বা কাজে তাঁরা যেন মনে কষ্ট না পান এটাই আমাদের মাতাপিতার প্রতি প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত। আমাদের এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে তাঁরা দুঃখ পান। যে কাজ করলে তাঁরা খুশি হবেন সুখ পাবেন যেভাবে চললে তারা ভালোবাসবেন ঠিক সেই কাজ করা এবং সেভাবে চলাই মাতাপিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য। বৃদ্ধাবস্থায় মাতাপিতা যখন অসহায় হয়ে পড়েন তখন সন্তানের উচিত তাঁদের সেবা যত্ন ভরণ পোষণ ও লালন পালন করা।

শিক্ষাজীবনে ও ছাত্রজীবনে কর্তব্য : মাতাপিতার প্রতি ছাত্রছাত্রীদের কর্তব্য খুবিই গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবে লেখাপড়াকালীন অবস্থায় সন্তানের প্রধান কাজ হবে মা-বাবার স্বপ্ন সফল করে তোলার জন্য নিরলস সাধনা করা। সন্তান লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হোক এটাই তাঁদের কামনা। সন্তান যোগ্য হয়ে পরবর্তী জীবনে কতটুকু সাহায্য করবে এ কথা কখনোই কোন বাবা-মা ভাবেন না। তাঁরা চান সন্তান বড় হয়ে মানুষ হোক। এই অবস্থায় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর কাজ হবে মাতাপিতা যেভাবে জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দান করেন সেভাবেই তাদের চলা। যেহেতু তাঁরা কখনই সন্তানের অকল্যাণ কামনা করেন না, সেজন্য তাঁদের আদেশ-নিষেধ বিনা বাক্যব্যয়ে পালন করতে হবে। মাতাপিতার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সন্তানদের চলতে হবে। আজকাল সমাজ যে অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে তাতে মাতাপিতারা নিজেদের সন্তান নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। সন্তানদের কার্যকলাপ যদি মাতাপিতার উদ্বেগাকুল হৃদয়কে শান্ত রাখতে পারে তাহলেই তাঁদের প্রতি যথার্থ কর্তব্য পালন করা সম্ভব হবে।

কর্তব্যের দৃষ্টান্ত

পৃথিবীতে যে সকল মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁরা সকলেই তাঁদের মাতাপিতার প্রতি শৈশবকাল থেকেই ভক্ত ও অনুগত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে হযরত ইউসুফ (আ) হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (র)বায়েজিদ বোস্তামী (র)রামচন্দ্র এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়।

উপসংহার

মাতাপিতার স্নেহের আশ্রয় স্বর্গের চাইতেও শ্রেষ্ঠ স্থান। কোন মানুষের ইহলৌকিক সুখ সমৃদ্ধির জন্য মাতাপিতার প্রতি কর্তব্য সম্পাদন করা অত্যাবশ্যক।

Post a Comment

Previous Post Next Post